উচ্চ লাফকে ইংরেজিতে হাইজাম্প বলে। উচ্চ লাফ দেওয়ার ল্যান্ডিং এরিয়ার দৈর্ঘ্য ৫ মিটার, প্রস্থ ৩ মিটার এবং উচ্চতা ৬০ সেন্টিমিটার। ক্রসবারের দৈর্ঘ্য ৪ মিটার, ওজন ২ কেজি এবং ব্যাস ২৯-৩১ মিলিমিটার। বিভিন্ন পদ্ধতিতে উচ্চ লাফ দেওয়া যায়। যেমন:
ক. সিজার কাট,
খ. বেলি রোল,
গ. ফসবেরি ফ্লপ
ক. সিজার কাট
১. দৌড়ে আসা (অ্যাপ্রোচ রান)- ৩০°-৪৫° ডিগ্রি কোণ করে বারের দিকে দৌড়ে আসবে। ৮ বা ৯টি বড়ো বড়ো পদক্ষেপ নেবে। শেষের ২ বা ৩টি পদক্ষেপ দ্রুত হবে।
২. মাটি ছেড়ে উঠা- (টেক অফ) যে পায়ে ভর করে উপরে উঠবে অর্থাৎ টেক অফ ফুট ক্রসবার থেকে এক ফুট দূরে রাখবে। বিপরীত পা সজোরে উপরে কিক করবে।
৩. ক্রসবার অতিক্রম করা- (ক্রসবার ক্লিয়ারেন্স)-কিক করা পা হাঁটু ভেঙে ক্রসবারের উপর আনার সাথে সাথে টেক অফ ফুটও একইভাবে আনতে হবে। ক্রসবারের ঠিক উপরে শরীরকে বসার মতো ভঙ্গিতে রাখতে হবে।
৪. মাটিতে নামা (ল্যান্ডিং)-দুই পায়েই অবতরণ করবে। তবে টেক অফ নেয়া পায়ের বিপরীত পা আগে জ্যাম্পিং পিট স্পর্শ করবে।
খ. বেলি রোল
১. দৌড়ে আসা (অ্যাপ্রোচ রান) ৪৫° কোণ করে ক্রসবারের দিকে দৌড়ে আসবে। দৌড়ে আসার জন্য ৭ বা ৮টি বড়ো বড়ো পদক্ষেপ নিবে। শেষের তিনটি পদক্ষেপ দ্রুত হবে।
২. মাটি ছেড়ে উঠা (টেক অফ)-যে পায়ে ভর করে উপরে উঠবে অর্থাৎ টেক অফ ফুট ক্রসবার থেকে এক ফুট দূরে ফেলতে হবে। অন্য পা সজোরে উপরে কিক করবে।
৩. ক্রসবার অতিক্রম করা (ক্রসবার ক্লিয়ারেন্স)-কোমর ক্রসবারের উপরে উঠলে শরীর ঘোরাতে হবে। ঘোরাবার সময় পেট ক্রসবারের খুবই কাছে থাকবে। এ সময় শরীর উপুড় অবস্থায় ক্রসবারের সমান্তরালে থাকবে।
৪. মাটিতে নামা (ল্যান্ডিং)- যে পায়ে টেক অফ নেবে, তার বিপরীত পা এবং দুই হাতের উপর ভর করে অবতরণ করবে।
গ. ফসবেরি ফ্লপ
১৯৬৮ সালে মেক্সিকো অলিম্পিকে আমেরিকার ডিক ফসবেরি এক নতুন পদ্ধতিতে উঁচু লাফ দিয়ে সোনার মেডেল পান এবং তখন থেকেই তার নাম অনুসারে ফসবেরি ফ্লপের প্রচলন। এই পদ্ধতির বিশেষত্ব হলো, যে পা ক্রসবার থেকে দূরে থাকে, সে পা দিয়ে মাটি ছেড়ে উপরে ওঠা হয় এবং ক্রসবারের উপর দেহটা ক্রসবারের সমান্তরাল থাকে ও পিঠটা ক্রসবারের কাছাকাছি থাকে। এই পদ্ধতির সব থেকে সুবিধা হলো যে শরীরের ভরকেন্দ্র জমি থেকে খুব অল্প তুলেই ক্রসবারকে অনায়াসে ডিঙ্গিয়ে যাওয়া যায়। যেহেতু পিঠের উপর ভর করে নামতে হয়, সেজন্য নিজের নিরাপত্তার কথা সবার আগে চিন্তা করতে হবে। তাই ফোমের ম্যাট ছাড়া কখনই এই লাফ অনুশীলন করা উচিত নয়।
১. দৌড়ে আসা (অ্যাপ্রোচ রান)- ক্রসবারের সাথে ৯০° কোণ করে দাঁড়িয়ে দৌড় আরম্ভ করে অর্ধবৃত্তাকারে ঘুরে ক্রসবারের কাছে আসতে হয়। শেষের দুটি পদক্ষেপে দেহের ভরকেন্দ্রকে একটু নামিয়ে নিতে হয়।
২. মাটি ছেড়ে উঠা (টেক অফ)- মধ্য শরীরটাকে খানিকটা পিছন দিকে ঝুঁকিয়ে দিয়ে যে পা দিয়ে মাটি ছাড়া হবে, সে পা-টাকে দেহের ভরকেন্দ্রের সামনে রাখতে হবে। যখনই ভরকেন্দ্রটি টেক অফ নেওয়া পায়ের উপর আসবে, তখনই সেই পা-টাকে হাঁটু সন্ধিতে ভেঙে নিয়ে দ্রুত ও জোরের সাথে উপরের দিকে উঠাতে হবে। একই সাথে অপর পাটাকে দুলিয়ে উপরে ডান কাঁধের লাইনে নিয়ে যেতে হবে, তার ফলে পিঠটা ক্রসবারের দিকে চলে আসবে।
৩. ক্রসবার অতিক্রম করা (ক্রসবার ক্লিয়ারেন্স)- যেই মাত্র দেহ মাটি ছেড়ে উপরে উঠবে, সাথে সাথে হাত দুটো পাশের দিকে দেহের সমান্তরালে এনে মাথা, মধ্য শরীর ও কোমরের নিম্নাংশকে ক্রসবারের উপর দিয়ে অতিক্রম করাতে হবে।
৪. মাটিতে নামা (ল্যান্ডিং)- হাত ও পা দুটোকে উপরে তুলে দিয়ে পিঠের সাহায্যে ম্যাটের উপর গড়িয়ে যেতে
কাজ-১: ফসবেরি ফ্লপ কৌশলটির বিভিন্ন ধাপ প্রদর্শন করে দেখাও। |
Read more